14 Jul 2015

মানুষের স্বর্গ

মানুষের স্বর্গ
*********


খড়দা স্টেশন। কারফিউ এর রাত। সত্তর দশক। ট্রেন থেকে নামল এক কিশোরী। বয়স তার ১৬ কি ১৭। নাম মৃত্তিকা। কাঁধে একটা বড় সড় ব্যাগ। তাতে ভর্ত্তি তার রাজনৈতিক পার্টির কাগজপত্র। যদিও সেই পার্টি আইনগত ভাবে বেআইনি সংগঠন বলে ঘোষিত হয়নি। কিন্তু কোন ব্যক্তি তার সাথে যুক্ত থাকলে, এমন কি জড়িত বলে সন্দেহ করলে, অথবা তার পত্র পত্রিকা কারো কাছে পাওয়া গেলে, তাকে পুলিশ আটক করতে, শারীরিক / মানষিক নির্যাতন করতে,  জেলে বন্দী করতে এমন কি হত্যা করতেও পারতো। সেই পার্টির মতাদর্শ কে সমর্থন করাও বেআইনি বলে মনে করা হতো।
---

বড় রাস্তায় মিলিটারী টহল চলছে, পাড়ায় পাড়ায় চিরুনি তল্লাশি চলছে। তাই যাত্রীদল বড় রাস্তা এড়িয়ে গলিঘুচি দিয়ে বাড়ীর পথ ধরলো। মৃত্তিকা চললো তাদের পিছু পিছু। একে একে পথচারীর সংখ্যা কমতে থাকে - টুপটাপ যে যার বাড়ী ঢুকে পড়ে। অবশিষ্ট দুটি মাত্র যাত্রী।  মৃত্তিকা আর ধুতি, খদ্দরের জামা পরা এক সৌম্যকান্তি বৃদ্ধ। মাথায় তার গান্ধীটুপী। তিনি কোমল কন্ঠে জিজ্ঞাসা করেন ,"তুমি কোথায় যাবে মা ? কোথায় বাড়ী তোমার ?" মৃত্তিকা ঢোক গেলে,  -- "আমার বাড়ী !"
---

বস্তুত পক্ষে এটা তার দ্বিতীয় দিন খড়দা অঞ্চলে। ঠিক আগের রাতে অন্ধকারে সাময়িক কদিন শেল্টারের জন্য সে তার এক পার্টি কমরেডের সাথে তার দিদির বাড়ী এসেছে। এ অঞ্চলটা তার একেবারে অচেনা অজনা। পথঘাট কিছুই চেনা হয়নি। এমনকি বেশী রাতে আসার ফলে বাড়ীর কারোর সাথে আলাপ হয়নি, কারো নাম, পদবী  পর্যন্ত জানা হয়নি। সবাই প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিল। একমাত্র তার পার্টি কর্মীর একটা ডাক নামটা শুধু জানে, যে এ বাড়ীর বাসিন্দা নয়। অধিক রাত হবার ফলে তারা দুজনও তাড়া তাড়ি শুয়ে পড়ে।
---

পার্টির বিশেষ জরুরী কাজে সাত সকালে মৃত্তিকা কে বার হতে হয়। বড় রাস্তা থেকে একটা গলির  চার নম্বর বাড়ী আর গলির দুই পাশে দুটো বড় ওষুধের আর স্টেশনারী দোকান - এইটুকু নিশানা মনে গেঁথে নিয়ে কাকভোরে বড় রাস্তা ধরে সোজা স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে কলকাতা চলে যায়। একমাত্র বন্ধুর দিদি জামাইবাবু দুজনেই কলকাতায় টেলিফোন ভবনে কাজ করেন এটুকু কথাই তার জানা ছিল। বাড়ীর নম্বর, গলির  নাম  কিছুই জানা নেই। ঠিক করে রেখেছিলো ফিরে বাড়ীর লোকজনদের সাথে আলাপ পরিচয় করে নেবে, এলাকা সম্পর্কে খোঁজখবর করে নেবে। কিন্তু বিধি বাম - হটাত কারফিউ জারী হয়ে গেছে। 
---

বৃদ্ধের প্রশ্নের কি জবাব দেবে সহসা ভেবে পায়না মৃত্তিকা। কিছুতো একটা বলতেই হবে। আমতা আমতা করে বলে , "দিদির বাড়ী যাব।" " গলির নাম কি ? কত নম্বর বাড়ী মা ?" " নম্বর টা তো জানিনা। দিদিরা নুতন এসেছে এখানে। আমিও কাল রাত্রে জামাইবাবুর সাথে এসেছি। এখানকার রাস্তা ঘাট কিছুই চিনিনা। বড় রাস্তা দিয়ে, একটা গলির মধ্যে বাড়িটা, গলির দু পাশে দুটো বড় দোকান আছে। আমি সকল বেলায় কলকাতায় কলেজে চলে গেছিলাম।" " পাগলী মেয়ে, বড় রাস্তা থেকে অনেক গলি আছে আর ওরকম অনেক দোকানও আছে। তাছাড়া বড় রাস্তায় তো এখন যেতেই পারবেনা। মিলিটারী টহল দিচ্ছে যে। পাড়ায় পাড়ায় চিরুনি তল্লাশি চলছে। বাড়ী বাড়ী ধর পাকড় হচ্ছে। এভাবে ঘুরে বেড়ানো তো একেবারে ঠিক হচ্ছে না। তা তোমার দিদি জামাইবাবুর নাম কি?" কোনমতে মাথা নীচু করে দুটি নাম বানিয়ে বলে মৃত্তিকা।
---

বাড়ীর নম্বর, রাস্তার নাম জানেনা বলে পার পাওয়া গেছে। কিন্তু নিজের দিদি / জামাইবাবুর নাম জানে না তাতো বলা যায় না। বৃদ্ধ মানুষটি চিন্তিত মুখে বলেন, " নতুন এসেছেন তাঁরা। নাম দিয়ে তো খুঁজে পাওয়া যাবেনা ! কোথায় কাজ করেন বলতে পারবে?" এবার খোলা মনে বলে মৃত্তিকা, "ওঁরা  দুজনেই কলকাতায় টেলিফোন ভবনে কাজ করেন।" "বাঃ, এখন খুঁজে পাওয়া যাবে। এখানে অনেকে আছে যাঁরা সেখানে কাজ করেন। আমি চিনি তাঁদের, চল তোমাকে নিয়ে যাই। তাঁরা নিশ্চয় চিনবেন তোমার দিদিদের।" একের পর এক , প্রায় সাত / আট টা বাড়ী নিয়ে গেলেন তিনি।
---

কারফিউ চলছে, নির্জন, নিঃস্তব্ধ রাত।  বড় রাস্তা থেকে মিলিটারী দের মার্চের খটখট আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। প্রায় ঘন্টা দুই তিন তারা এ গলি, সে গলি খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু দুটো অলীক নামের ঠিকানা কে দেবে ! পাড়ায় পাড়ায়, বাড়ীতে বাড়ীতে তল্লাশি চলছে।এভাবে ঘুরে বেড়ানো ভীষন ভাবে বিপদজনক। ব্যাগ ভর্তি পার্টির পত্র পত্রিকা। ধরা পড়লে শুধু তার নয়, এই দয়ালু, নিরাপরাধ, বৃদ্ধ মানুষটি ও রেহাই পাবেননা। শীতের রাত। মৃত্তিকা মনে মনে নিজেকে অপরাধী মনে করে লজ্জিত বোধ করে। কিন্তু এই অজানা অচেনা জায়গায় তার কি করা উচিত ভেবে পায় না। সারা শরীর ঝিম ঝিম করতে থাকে। মাথা টা ভারী হয়ে আসে। তার জন্য নিরীহ, নিস্পাপ মানুষটি  কে অমানুষিক অত্যাচারের মুখে পড়তে হবে, এটা ভাবতেই সে মনের একটা জোর ফিরে পায়। বলে," মেশোমশাই অনেক রাত হয়ে গেছে, আপনি এবার বাড়ী যান, সেখানে সবাই চিন্তা করছে। আমি ঠিক খুঁজে পেয়ে যাব।" "কি বলছো তুমি , এই বিপদে এত রাতে তোমাকে ফেলে আমি বাড়ী চলে যাব , সেটা হয় ! বরং আমি বলি কি মা, আজ রাত তুমি এই বুড়ো ছেলের বাড়ীতে থাক। কাল সকালে আলো ফুটলে আমার মেয়ের সাথে তোমার দিদির বাড়ী খুঁজে নিও। আমার নাম রনজিত সরকার " স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মৃত্তিকা। তবুও কুন্ঠিত স্বরে বলল," মেশোমশাই আমাকে বাড়ী নিয়ে গেলে কোন অসুবিধা হবে না তো।" " বিপদের সময়ে মানুষ যদি মানুষের পাশে না দাঁড়ায়, তবে তো  মানুষ জন্ম ই বৃথা মা "- সাবলীল ভাবে উত্তর এলো। 
---

রাত প্রায় বারোটায় দুইজন বৃদ্ধ ভদ্রলোকের বাড়ী পৌঁছালো। পুরো পরিবার চরম উত্কন্ঠায় সময় গুণছে। পরিবারের মাথা, বৃদ্ধ মানুষটি সকাল দশটার ট্রেনে কলকাতায় অফিসের জন্য বেরিয়েছেন রোজের মতন। সন্ধ্যা নয়টার ট্রেনে বাড়ী ফেরেন প্রতিদিন। স্টেশন থেকে দশ মিনিটের হাঁটা পথ।  কিন্তু প্রায় মাঝ রাত পর্য্যন্ত না ফেরায়, স্বাভাবিক ভাবে সবাই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এদিকে হটাত করে একযোগে কারফিউ, চিরুনী তল্লাশী, ছুতায় নাতায় মিথ্যা সন্দেহে অত্যাচার, ধর পাকড়, গুলি গোলার আওয়াজ - সবাই দূর্ভাবনায় তঠস্থ, চূড়ান্ত বিপর্যয়ের আশঙ্কায় প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম।
---

"ওঃ তুমি তবে অবশেষে ফিরতে পেরেছো", তাঁর স্ত্রী ফুঁফিয়ে কেঁদে উঠলেন। সারা পরিবার তাদের ঘিরে ধরলো।পরিবারে মোট সাতজন সদস্য - বৃদ্ধ, তাঁর স্ত্রী, বিধবা বোন, ছেলে, ছেলের বউ, একটি মেয়ে আর একটি ছোট্ট নাতনী। নিম্নমধ্য পরিবার। পূর্ববাংলার মানুষ। তাঁর আর ছেলের - দুজনের রোজগারে সংসার চলে। ঘরের পরিবেশ সাদামাটা - কিন্তু পরিস্কার পরিছন্ন। বেড়া আর টালির ছাদ দেওয়া দুটি শোবার ঘর, একটি লম্বা দালান, তার এক পাশে ছোট্ট রান্না ঘর , আর বাথরুম। শুধু সযত্নে শহীদ ভকত সিং এর বিরাট একটা ছবি সারা বাড়ী আর পরিবারের অন্তর আত্মা আর স্বত্তা কে মেলে ধরেছে।
---

"আরে দাঁড়াও, আমাদের  একটু নিঃস্বাস নিতে দাও। এই মেয়েটি এখানে ওর দিদির বাড়ী নতুন এসেছে, কিন্তু অন্ধকারে গলি ঘুচি দিয়ে আসতে গিয়ে রাস্তা হাড়িয়ে ফেলেছে। আমরা দুজন খোঁজার চেষ্টা করছিলাম এতক্ষণ। খুঁজে না পেয়ে বাড়ী নিয়ে এলাম। রাতে কষ্ট করে বুড়ো ছেলের বাড়ী থাকুক। কাল সকালে কেউ সঙ্গে গিয়ে ওর দিদির বাড়ী পৌঁছে দেবে।"
---

"আহারে মেয়ের আমার এই ধকলে মুখ শুকিয়ে গেছে , তা যা অমানুষিক অত্যাচার চলছে - এই জঙ্গলের রাজত্বে  মানুষের মাথা ঠিক রাখাই মুশকিল। তা এত রাত পর্য্যন্ত তোমাদের এই বিপদের মধ্যে বাড়ী খোঁজা একবারেই ঠিক হয়নি। প্রথমেই এখানে চলে আসা উচিত ছিল। কিছু অঘটন যে ঘটেনি এই আমাদের ভাগ্য। তা তোমার নাম কি মা?"
মৃত্তিকা এতক্ষণ অবাক হয়ে দেখছিলো। একবারের জন্যও কেউ তাকে অবাঞ্ছিত বলে মনে করেনি। তার জন্য তাঁদের বাড়ীর কর্তার যে কত বড় বিপদ হতে পারত সে কারনে উটকো আপদ বলেও ভাবেনি। "আমার নাম মৃত্তিকা।"
---

বাড়ীর গৃহিণী সঙ্গে সঙ্গে রাশ ধরলেন। মেয়েকে বললেন," মিনি মা, ওকে কলঘরে নিয়ে যাও হাতমুখ ধুয়ে নিক। তোমার জামা কাপড় ওকে পরতে দাও। আর বড় ঘরে সবার বিছানা কর। তোমার সাথে ওর শোবার ব্যবস্থা কর। ছোট ঘরে দাদারা যেমন শোয় তেমন বিছানা করে দাও।" পুত্রবধূকে বললেন," চল শিখা মা আমরা খাবার ব্যবস্থা দেখিগে।অনেক রাত হয়েছে, আর দেরী করা ঠিক হবেনা।"
---

হাতমুখ ধুয়ে সবাইয়ের সাথে খেতে বসল মৃত্তিকা। মেঝেতে আসন পেতে গোল হয়ে সবাই খেতে বসেছে। সবচেয়ে ভাল জায়গাটি তার জন্য বরাদ্দ হলো। খুব সাধারণ খাবারের ব্যবস্থা - ভাত, ডাল, আলু সেদ্ধ নুন, তেল, আর লঙ্কা দিয়ে মাখা আর একটা নিরামিষ তরকারি। কিন্তু আন্তরিকতার অনবদ্য ছোঁয়াতে সাধারণ খাবার অসধারণ হয়ে উঠেছে।পাছে সে লজ্জা করে, কম না খায় - সবাই খেয়াল রেখেছে। কি অপরিসীম আন্তরিকতা আর আদর !সামান্য সময়ের আলাপ, মৃত্তিকার বানানো পরিচয়। কিন্তু কোন অবিশ্বাসের বা সন্দেহের  বিন্দুমাত্র ছোঁয়া নেই কারও মনে। সকলেই সহৃদয়তায় আর মানবিকতায় ভরপুর। বাড়ীর সবাই যেন একছাঁচে গড়া। সরলতা, বিশ্বস্ততা, সততায় পরিপূর্ণ সকলেই। এ যেন অন্য এক জগৎ। মাটির এই পৃথিবীতে এঁরাই গড়ে তুলেছে মনুষ্যত্বের মহান স্বর্গ।
---

রাত্রে  সে আর মিনি পাশপাশি শুয়ে অনকেক্ষণ গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ল। ঘুমের মধ্যে মৃত্তিকা স্বপ্ন দেখল বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'চাঁদের পাহাড়' এ সে আর মিনি বেড়াচ্ছে। হটাত 'বুনিপ' এসে তাদের দুজন কে আক্রমন করেছে। ঠিক সেই সময়ে কেউ তাকে ধাক্কা দিচ্ছে," উঠে পড়, মিটি, অনেক বেলা হয়ে গেছে। চা আর জলখাবার নিয়ে বৌদি আর মা বসে আছে। তাড়াতাড়ি মুখ ধুয়ে খাবি চল।" চমকে উঠে বসে সে, হটাত ঘুম ভেঙে থতমত খেয়ে যায়। চেয়ে দেখে চারিদিক আলো ঝলমল করছে। স্বপ্নের জগৎ থেকে নেমে আসে বাস্তবের মাটিতে। রাতের বিভীষিকা কেটে গেছে।
----

মিনিকে বলে," তুই আমাকে বড় রাস্তায় পৌঁছে দিলে আমি আমার দিদির বাড়ী খুঁজে নিতে পারবো, যাবি একটু আমার সাথে।" "অবশ্যই পৌঁছে দেবো, কিন্তু আগে খেয়ে নে।" খাওয়া দাওয়া সেরে বেরোবার সময় পুরো পরিবার এসে ঘিরে দাঁড়ায় তাকে। মিনির দাদা বলেন," মিনি ওকে একেবারে ওর দিদির বাড়ী পৌঁছে দিবি , ও কিন্তু এখানকার কিছুই চেনেনা।" রনজিত বাবু তার মাথায় হাত রেখে কাঁপা গলায় বলেন, "মাটা আমার বড় কষ্ট পেয়েছে কাল রাতে। আবার আসিস মা এই বুড়ো ছেলেটাকে দেখতে। আর সাবধানে থাকবি। আজকাল দিনকাল ভাল না।" মাসীমা কে প্রনাম করে
মৃত্তিকা বলে ,"যাই মাসীমা।" "যাই , বলতে নেই, বল আসি।" বলে চিবুক ধরে আদর করে দিলেন। বৌদি বললেন, "আমাদের ভুলে যাবে নাতো !আবার এস কিন্তু। "
---

মৃত্তিকা কোনমতে চোখের জল চাপলো। কাল রাতে সে উড়ে এসে জুড়ে বসেছিল। সঙ্গে নিয়ে এসেছিল একরাশ বিপদের ঝুঁকি। যদি রাতে এ বাড়ী টাতে তল্লাশি হতো, তার ব্যাগ ভর্ত্তি কাগজ পত্রের জন্য বাড়ীর সবাই বিপদে পড়তো। বিশেষ করে রনজিত বাবু ও তাঁর ছেলে। এক অজানা, অচেনা মানুষকে কত অনায়াসে তাঁরা  সবাই আপন করে নিয়েছেন , একবারের জন্যও অবিশ্বাস করেননি। মানবিকতা আর সহৃদয়তার মূর্ত প্রতিক। এরাই তো পৃথিবীতে তাদের স্বপ্নের স্বর্গ রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। এঁদের মত মানুষ দের খুঁজে বার করাই তো তাদের ব্রত। শ্রধ্বা আর কৃতজ্ঞতায় তার মন পরিপূর্ণ হযে উঠলো। "সত্যই আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ কত মহৎ"- এই কথা ভাবতে ভাবতে মিনির সাথে রওনা দিল।

+++++++++++++++

প্রায় দীর্ঘ চল্লিশ বছর কেটে গেছে। সেদিনের কিশোরী মৃত্তিকা আজ ষাটোর্ধ ,স্বামী পুত্র নিয়ে পুরোপুরি সংসারী। এক রাতের আশ্রয়ে থাকা সেই পরিবার, সেই পরিবারের  মহান বৃদ্ধ গৃহকর্তার কথা আজও মনে পড়ে। তাঁরা অগাধ বিশ্বাস আর আদরে এক অজ্ঞাত কুলশীল কে সমাদরে আশ্রয় দিয়েছিলেন - চরম বিপদ মাথায় নিয়ে তাকে রক্ষা করেছিলেন বিপর্যয়ের হাত থেকে। মাঝে মাঝে সে ভাবে আজ সে নিজে কি পারবে,ওই  চূড়ান্ত কঠিন সময়ে, ওই রকম পরিস্থিতিতে ওই ভাবে অজানা অচেনা উটকো কোন মানুষ কে নির্দ্বিধায় নিজের বাড়ীতে আশ্রয় দিতে, আপনজনের মত বুকে টেনে নিতে !

___________________________________________________________________________________________

সত্যঘটনা অবলম্বনে। প্রথম প্রকাশিত 'কালপ্রতিমা সাহিত্যপত্রে,  জানুয়ারি ২০০১, সপ্তম বর্ষ,  চতুর্থ সংখ্যা।'
____________________________________________________________________________________________-























  






























No comments:

Post a Comment